Profile image of Baishakhi Dey
Baishakhi Dey

@anonymous

No bio available.

Joined on 1 month ago
1 month ago 25 views

আনন্দের মাঝে বিষাদ

আনন্দের মাঝে বিষাদ

কলমে-বৈশাখী দে

বিষয়-শারদীয়া উৎসব

তারিখ-26/9/25



শরৎ তার অরুণ আলোর অঞ্জলি দিয়েছে ছড়িয়ে।বনের পথ শিশিরে ভেজা।গ্ৰামের নদীর পাড়ে কাশফুলের বনে যেন অপু দূর্গার দুষ্টুমি।শিউলি তলায় শিউলি ফুল শুয়ে শুয়ে একে অপরকে শোনাচ্ছে তাদের কথা।কখন তাদেরকে তুলে দেবীর পায়ে অঞ্জলি দেওয়া হবে।শাপলা,পদ্মে পুষ্করিনী ভরভর।শুভ্র বস্ত্রে সজ্জিত করে মেঘ গগনের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।শারদীয়া উৎসবে মেতেছে বিশবাসী।আগমনী গানে আকাশ বাতাস মুখরিত।প্রত্যেকবারের মতোই

সকলে নব রূপে সজ্জিত হতে চাই।তাইতো কবে থেকে শুরু হয়ে যায় বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা।কাপড়ের, কসমেটিক্সের দোকানে উপচে পড়া ভিড়।সেরকমই ছোট্ট তিন্নির এবারও নূতন জামা পাবার আশায় মুখে ফুটে উঠেছিল একরাশ হাসির ঝলক।কিন্তু যখন শুনল তার মা জামা কিনে আনতে পারেনি মনটা দুঃখে ভরে গেল।পরক্ষণেই তাকে কে যেন বুঝিয়ে দিল তোর বাবা মারা গেছে,তোরা যে গরীব তাই এসব কিছু আশা তোর মানাই না।অসহায় মা এর ওর বাড়ির পরিচারিকার কাজ করে কোনরকমে শাক,ভাত জোগাড় করে।এই একরত্তি মেয়ে এতটাই বোঝদার যে ওই মাকে বোঝায় পাশের বাড়ি বেলা মাসি যে পুরানো জামা দিয়ে গেছে ওটা পড়েই পূজো দেখব।নতূন জামা পড়ে পূজো দেখতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।এবার হয়নি তো কি হয়েছে পরের বার হবে।মায়ের অঝর ঝরে অশ্রু ঝরতে থাকে।সেই ছোট্ট মেয়ে তিন্নি অভাবের সঙ্গে লড়াই করতে করতে এখন পৌঁছেছে ষোড়শীতে।চেহারার উজ্জ্বলতার ছাপ।পড়াশোনাতেও বেশ ভালো।সে চাই পড়াশোনা করে নিজের রোজগারে মাকে নিয়ে সুখের সংসার করতে।তার ছোট্ট ঘরের আঙিনায় কিছু ফুলের গাছ আছে।সেই ফুল তুলে উমা মায়ের পায়ে অঞ্জলি দিয়ে আসে সবার শেষে।ছোট থেকেই সে এটা করে।উমা মায়ের মধ্যেই খুঁজে পাই তার গর্ভধারিণী মায়ের রূপ।ছোট্ট তিন্নি ঘরটাকে মন্দির মনে করে।দুই মাকেই শ্রদ্ধা,ভক্তির মাধ্যমে সেবা অর্পণ করে।“ইয়া দেবী সর্বভূতেসু শক্তিরূপেন সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তসৈ নমোহ নমঃ”এই মন্ত্র শুনে ইচ্ছাশক্তি,মনোবল

আরো বেড়ে যাই।অপেক্ষা করে থাকে পরের বছরটা ভালো কাটানোর।মহামায়ার কাছে প্রার্থনা করে তার মতো অসহায়দের পাশে যেন সর্বদা থাকেন।লাল পাড়

সাদা শাড়িতে তাকে সাক্ষাৎ জগদ্ধাত্রী লাগে।তেমনি নম্রতা,ভদ্রতায় পাড়ার সব মেয়ের থেকে শ্রেয় হয়ে উঠেছে।কিছু বছর এভাবেই কেটে যাই।তিন্নি একটা চাকরি পাই।ঘরবাড়ি করেছে দেখবার মতো।তার মনে

একটাই আক্ষেপ তার মাকে এসব কিছু দেখাতে পারল না।আশ্বিনের এক শারদ সন্ধ্যায় একদল পিশাচের হাত

থেকে তিন্নিকে বাঁচাতেই তার মায়ের প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়।দেবীর কাছে গিয়ে বলে যদি বা দূর করলে দারিদ্রতা

কেন দিলে এমন নিঃসঙ্গতা।আজ আমি বড় একা।সেই

আদর,শাসনে ভরা হাত দুটোর স্পর্শ আবার পেতে চাই।মর্ত্যের অসুরদের অত্যাচারে দূর্গারা অপমানিতা,ধর্ষিত। তাই দশ হাতে দশ অস্ত্র তুলে নারীশক্তি জাগরিত হোক দূর্গাা রূপে।তুমি মা সেই শক্তি জোগাও।সবার কাছে শারদীয়া উৎসব খুশি আনলেও তার কাছে শারদীয়ার উৎসব মানে দুঃখের সাগরে ভেসে যাওয়া।আজ বিজয়া দশমী।মায়ের বিসর্জনে বিষাদের সুর।আবার একটা

বছর পর মায়ের আগমনের অপেক্ষা।