Profile image of Amitava Gupta
Amitava Gupta

@anonymous

No bio available.

Joined on 3 years ago
3 years ago 334 views

বাঁজা

প্রায় আট বছর পর  পাড়ায় এল অহনাএকই রকম আছে জায়গাটাকোলকাতার মধ্যেই অথচ শান্ত,নিরিবিলিঅরিন্দমের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর কুচবিহারেই ফিরে গেছিল কিন্তু একেই বোধ হয় বলে নিয়তি চাকরীসূত্রে আসতে হোল সেই কলকাতায়শুধু তাই নয়,খুব জরুরি একটা ফাইল নিয়ে সহকর্মীর বাড়িও হানা দিতে হল-যেটা কিনা ওর শ্বশুরবাড়ির কাছেই

কাজটা মিটে গেলে,অফিসের গাড়িতে উঠতে গিয়েও পা টা আটকে যায় অহনার তো লাল দোতলা বাড়ীটাএখনো সামনের কৃষ্ণচূড়ার মাথাটা বাড়ীর রঙে রং মিশিয়ে হাসছেসামনের  একফালি বারান্দা

 বিয়ের পর অরিন্দমের জন্য অপেক্ষা আর মিষ্টি খুনসুটি এখনো বোধহয় ঘুরে মরছেমস্ত বেসরকারি কোম্পানির বিশাল চাকরি অরিন্দমেরপ্রথম প্রথম আদর সোহাগের নিবিড় আচ্ছন্নতায় অহনা বুঝতে পারে নি,ঘরের চাইতে বাইরের টান অরিন্দমের কাছে বেশিকাজের জন্যই হোক বা নিজের উচ্ছৃঙ্খলার জন্যই হোক মদ এবং অন্য অনুষঙ্গ ওদের মধ্যে একটু

একটু করে পাঁচিল তুলতে শুরু করেছিলহয়ত একটা নতুন প্রানের আগমন ঘটলে সমস্যার সমাধান হলেও হতে পারত-কিন্তু সেখানেও অরিন্দমের অপারগতাসন্তান হীন জীবন নিজেরা বিশ্বাস করলেও ছেলের প্রতি অন্ধ স্নেহে সুপ্রভা মানতে নারাজগড় পরতা শ্বাশুরিদের মতো একবাক্যে অহনাকে বাঁজা বলতে তিনি দ্বিধা করেন নি

প্রতিরাতেই অরিন্দমের নেশা করে বাড়ি ফেরা,সুপ্রভার দৈনন্দিন অপমান অহনাকে ভেতরে ভেতরে কঠিন করে তুলছিলসেদিনও ছিল মাতাল করা এক বসন্তের রাতমাতাল অরিন্দম গায়ে হাত তুলল,আর ছেলেকে আড়াল করতে অহনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সুপ্রভা সেদিনই সব সম্পর্কের ইতি ঘতালেনকুচবিহারে বাবা মার কাছে ফিরে গিয়ে নিজের চেষ্টায় একটা ভালো চাকরি জুটিয়ে নিতে নিতেই অহনার চুলে রুপোর স্পর্শ লেগেছে

আজ এই সংসারে অহনা একাদক্ষিন কোলকাতার একটা অভিজাত আবাসনে আঠারশ স্কোয়ারফুট ফ্ল্যাটের মালকিনসঙ্গে থাকে মালতি-ঘরের যাবতীয় কাজের জন্য

বাড়ীর লোহার গেটটায় হাত দিতেই অহনার সারা শরীর শিউরে অথেএক তলার বারান্দায় একটা মাঝবয়েসী মহিলা ফোনে ব্যস্তঅহনার প্রতি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দিতেই ও বলে।

-এখানে সুপ্রভা দেবী বলে-

প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই আঙ্গুল তুলে ঘরের ভিতরটা নির্দেশ করেন মহিলাঅহনা ঘরে ঢোকে

 কি দেখছে?বিছানার সাথে মিশে যাওয়া একটা মানুষচলৎশক্তি হীণ,জীর্ণ মলিন এক নারী কঙ্কাল

-কে হন আপনি?মেয়ে?-ছেলে তো বিদেশে -ওখান থেকেই সেন্টারে টাকা পাঠিয়ে দেয়-তাও শেষ দুমাস বাকীআসলেন যখন একটু আগে আসতে পারলেন না?

-একজনকে গাড়িতে তূলতে  হবে-একটু এসো।

মোবাইলে অফিসের ড্রাইভারটাকে ডাকে অহনা

 

মা হওয়ার নির্দিষ্ট কোনও বয়েস আছে নাকি?




অমিতাভ গুপ্ত

Image for বাঁজা