শিক্ষার সেকাল --- একাল
গুর মহাশয় সামান্য কিছুর বিনিময়ে শিক্ষা দান রকরতেন । গুরুর বাড়ীতে থেকে সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা হত । কিন্তু সংস্কৃত পাঠ উচবর্ণীয়দের বিশেষ করে । কিন্তু চণ্ডাল ইত্যাদি নিম্নবর্গীরা ছিল বঞ্চিত । তা আমরা পাই অস্ত্রশিক্ষার জন্য দ্রোণাচার্যের কাছে কৌরব ও পাণ্ডবগণ ছিলেন । কিন্তু একলব্যের শিক্ষাগ্রহন দ্রোণাচার্যের কাছে হতে পারেনি । তিনি । তাই বনমধ্যে গুরুর প্রতি শ্রদ্ধায় আগ্রহে মূর্তি স্থাপন করে এই অস্ত্রশিক্ষা করেন ।বনের মধ্যে প্রবেশ করলেন দ্রোণাচার্য , কৌরব ও পাণ্ডবের অস্ত্রশিক্ষার পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কিন্তু দেখলেন অর্জুন বাদে আরোও একজন নিম্ন বর্ণীয় সাধনার বলেস্ অস্ত্রশিক্ষারশ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হচ্ছে । সেই হল একলব্য । তাই কৌশলকরে অর্জুনকে শ্রেষ্ঠ সুন্দর প্রতীয়মান করবার জন্য গুরুদক্ষিণা চাইলেন । একলব্য ও সাগ্রহে গুরুর দক্ষিণা হিসেবে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ স্বহস্তে কর্তন করে গুরুকে দিলেন।
এ হল শিক্ষার মহিমা ও শিক্ষাগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা।
বিনয় ভক্তিভাব জাগ্রত হয় শিক্ষার মাধ্যমে।
বিদ্যা দদাতি বিনয়ং
বিনয়াৎ যাতি পাত্রতাম
পাত্রততাৎ ধনমোপ্নোতি
ধনাৎ ধর্ম ততো সুখম্।
বিভিন্ন পন্ডিতমশাই টোল খুলে বসতেন সংস্কৃত ভাসার পাঠদান করা হতো। শিক্ষা সর্বস্তরের জন্য তখন হয় নাই। তাই পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র মহাশয় কিছু প্রাথমিক শিক্ষার জন্য স্কুল খোলার চেষ্টা করেন নারীর জন্য বালিকা বিদ্যালয় খোলেন। তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শক থাকার সময় শিক্ষার প্রসার হয়।
মহাত্মা গান্ধীর প্রচেষ্টায় নিম্নবুনিয়াদী ও বুনিয়াদী শিক্ষার প্রচলন হয় । হাতে হাতে সূতা কাটার শিক্ষা ইত্যাদি শিক্ষাও হয়। তারপর ধীরে ধীরে শিক্ষাদীক্ষা ও রােজগারের কিছু ব্যবস্থা হয় । আগেকার শিক্ষকগণ সামান্য সাড়ে ছয় টাকা ৭ টাকা বেতনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে শিক্ষা দান করতেন । তারা চতুর্থ শ্রেণী বা ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে পাঠদান করতেন । পাঠশালায় ব্যাগে ধুলাে নিয়ে গিয়ে ধুলা মাটিতে পাতিয়ে অক্ষর শিখতেহতাে । দেশে শিল্পের বিস্তার হয় নাই , তাই স্লেট ছিল না । পরের দিকে স্লেট আবিষ্কার হল অ - আ - ক - খ অক্ষর শেখা । শতকিয়া লেখা । পুরাতন হিসাবে গন্ডা , বুড়ি পণ শিক্ষা শুরু হয় ।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হল , ১৯৫০ সালে ভারতের জনগণ শাসনভার হাতে পেল। Dr. B R Ambedker সংবিধান রচনা করেন।
এই ভারতীয় সংবিধানে ভারতীয়দের শিক্ষা, স্বাস্হ্য,কৃষি,বিজ্ঞান বিষয়ে সংস্হান থাকে।সেই অনুযায়ী দেশে শিক্ষার জন্য বিভিন্ন কমিশন বসানো হয়।এই সব কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী দেশের শিক্ষা ও স্বাস্হ্য বিভাগের উন্নতিবিধান হতে থাকে । যেমন হান্টার কমিশন , মুদালিয়ার কমিশন , রাধাকৃষ্ণন কমিশন ইত্যাদি ।
১৯৫১ - ১৯৫৫ এই পাঁচ বছরের জন্য প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চালু হয় । এতে দেশে বুনিয়াদী শিক্ষারও মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয় । তখন সাধারণত গ্রামে গঞ্জে অল্পশিক্ষিত শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা পাঠশালা খুলে বসতেন এবং ছেলেদের পড়ার ব্যবস্থা করতেন ।
তখন ছাত্রছাত্রীদের চতুর্থ শ্রেণীর পরীক্ষা বাইরে দিতে যেতে হতো । সেখানে ছাত্রদের পরীক্ষা দিয়ে আসতে হতাে আমাদের দাঁতন সেন্টার কিন্তু তেমন খরচ করে থাকার ব্যবস্থা করার উপায় নাই । তাই কষ্ট করে থেকে পরীক্ষাদিয়ে বাড়ী ফিরতে হতাে । সেই চতুর্থ শ্রেণীতে ১৯৬২ সালে এলো নতুন হিসাবের খবর । তখনকার পাই পয়সার হিসাব বড় বড় করে লেখা পড়তে হলাে । বাদ গেল পুরানাে হিসাব । ৬৪ পয়সায় ১ টাকা বাদ গিয়ে ১০০ পয়সায় ১ টাকা । সের ছটাক বাদ গিয়ে হলাে ১০০০ গ্রামে ১ কিলোগ্রাম । তখন নতুন ওজনের আর্যা প্রায় মুখস্থ করে ফেলতে হলাে । শেখা অঙ্ক যেভাবে অভ্যাস করতে হলো - ।
“ মিলি , সেন্টি , ড্রেসি , গ্রা ,
ডেকে হেকে মারাে কিলে ” ।