Profile image of Sasanka Sekhar Mishra
Sasanka Sekhar Mishra

@sasanka

4 years ago 1087 views

শিক্ষার সেকাল --- একাল

তারপর সম্ভবতঃ ১৯ঌ0 - ১৯৯২ সালে এল Computer এর মাধ্যমে শিক্ষার হিড়িক । বিশ্বায়নের যুগে তপন শিকদারের উদ্যোগে Internet ব্যবস্থা চালু হল । Hello Machine হাতে হাতে এলো । মানুষ পত্রলিখন শিক্ষা ভুলে গেল। ছন্দোবদ্ধভাবে মনের আবেগকে প্রকাশ করতে মানুষ ভুলতে আরম্ভ করল । ছাত্রছাত্রীদের পত্রলিখন ভুলে যন্ত্রের মাধ্যমে ভাবপ্রকাশের জন্য বাংলা - সাহিত্যের একটা দিক শিক্ষার ঘাটতি দেখা দিল । ধীরে ধীরে যন্র দানবের দৌলতে প্রথাগত শিক্ষা বিঘ্নিত হল । শিক্ষা ব্যবস্থার এই পরিবর্তন হতে হতে আজ আমারা মাথা খাটিয়ে অংক করারও দরকার নাই । Calculator আমাদের যতসব সমাধান করছে । Computer ব্যাংকগুলােকে কর্মচারী বাদে চলতে সাহায্য করছে । Automation চালু হল শিক্ষার অভিশাপ । বহু বেকার সৃষ্টি করল । যন্ত্র দানব এসে দেশে বেকারত্ব বাড়াল ।

শিক্ষার অবমূল্যায়ণ ----

পরীক্ষা পদ্ধতিকে পরিবর্তন করে শিক্ষার অবমূল্যায়ণ শুরু হল । পাশ - ফেল প্রথা তুলে দিয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পরীক্ষা ব্যবস্হা থাকল না।

সবাইকে একটা পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে সবাইকে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সুযােগ করে দেওয়া হল। কিন্তু মাধ্যমিক স্কুলগুলােকে করা হল একটা Admission Test পরীক্ষা । এই সব পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবে না তারা সেই স্কুলে পড়ার সুযােগ থেকে বঞ্চিত হল । মােটামুটি যেগুলাে এলাকার নামী স্কুল , একটু পড়াশুনা করানাে হয় তারা তাদের সুযােগ দিল না। সেই সমস্ত পড়ুয়ারা হয় পড়া বন্ধ করল অথবা অন্যত্র পড়ার চেষ্টা করল । শূণ্য পাওয়া পড়ুয়ারা কোনরকম নামসইটা করার মত সামর্থ অর্জন করল

এদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে A,B ,C,D ইত্যাদি গ্রেড চালানো হল।তাতেও কিছু ছেলে মেয়েকে পরীক্ষা করা হল।এই ভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা রকম অপারেশন শুরু হল। তাতে কোনোরকম করে শিক্ষাঙ্গনে থাকার সুযোগ পেল।কিছু dropout Back word student কে ক্লাসে রেখে পাশ করানাে চেষ্টা হল । এর ফলে Non - govt, সংস্হা কিছু পরীক্ষা করানো ব্যবস্হা করল অনেক Nursery School গজাল । ব্যাঙের ছাতার মত কিছু নার্শারী স্কুল , কিছু English Medium public School গজালো । এইভাবে শিক্ষাবে একটা নতুন মডেল -এ নিয়ে নতুন শিক্ষা পদ্ধতি চালু হলাে । স্বাক্ষরতার অভিযান শুরু হল । বাম আমলে নিরক্ষরতার দূরীকরণে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হল । কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার সঙ্গে বাড়ীর পাশ্ববর্তী কমপক্ষে ২-৪ টা ছলকে অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করতে হবে । তাদের এই শিক্ষাদানের জন্য নম্বর দেওয়া হবে । এইভাবে দেশে যাতে টিপ দিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন না চালাতে হয় তার ব্যবস্থা হল । টিপ ছাপ যেন আর না থাকে । অন্ততঃ প্রত্যেকের জীবনে নামটা সই করা এবং সাধারণ হিসাব জেনে সংসার চালাতে পারে তার চেষ্টা করা হল । যাতে মহাজনরা সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে না দেয় তার ব্যবস্থা করা হল । এইভাবে স্বাক্ষরতার অভিযানে যুক্ত হলেন শিক্ষকরাও । স্কুল ছুটির পর নৈশ বিদ্যালয়ে এসে বড় বড় মানুষদের তথা মায়েদের শিক্ষা দান করবেন। নানারকম ব্যবস্হা করা হল, তামাক,বিড়ি যা খান তাদের দিয়ে পড়ার ব্যবস্হাও করা হল।

শিক্ষার প্রসার ও নিরক্ষরতা দূর্নীকরণের অভিযান সম্পূর্ণ সফল না হলেও কতক ক্ষেত্রে আংশিক সফল হল । আর কিছু সুযােগ সন্ধানী মানুষ এই সুযোগে কিছু অর্থ তছরূপও করল । তার কোন হিসেব নিকেশ নাই । শিক্ষা গ্রহাণ বয়সের বাধ্যবাধকতা নাই তাই বলা হতো ---

' দাদু নাতি ভাই ভাই

চল একসাথে পড়তে যাই।"

Image for শিক্ষার  সেকাল  --- একাল